প্রাথমিক শিক্ষা এবং আমার ছেলেবেলা
উত্তর টাঙ্গাইলের প্রাচীনতম প্রাথমিক বিদ্যালয় 1926 ইং প্রতিষ্ঠিত,আলোকদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালায় আমার শিক্ষা জীবন শুরু এখানেই,তখন অবশ্য পাক-প্রাথমি বিদ্যালয় কিংবা কিন্টার গার্ডেন এর প্রচলন ছিল না 2001 ইং।
৫ কিংবা সাড়ে ৫ বছর বয়স হতেই স্কুলে আসা যুদিও অধিকাংশ ছাএ-ছাএী ৬-৭ বছর বয়স হতে স্কুলে আসত বাড়ির কাছের স্কুল হয়তো সে কারণেই এত ছোট বয়সে স্কুলে আসা ।
আমাদের সময় স্কলে প্রায় ৬-৭ শত ছাএ-ছাএী পড়া শুনা করত, ২ ভাগে ক্লাস নেয়া হত ৯.৩০ মিনিট হতে ১২.৩০ মিনিট , প্রথম এবং ২য় শ্রেণীর এবং ২ টা হতে ৪ টা পর্যম্ত ৩য়,৪র্থ এবং ৫ম শ্রেণীর।
ছাএ-ছাএী বেশী হওয়ার কারণে প্রথম শ্রেণীতে ক এবং খ নামে ২ বিভাগ ছিল, সবচেয়ে বড় রুম টা ছিল ২য় এবং ৪র্থ এবং ৫ম শ্রেণীর ক্লাসটি একটু ছোট ছিল, ৫ম শ্রেণীতে পড়াকালিন সময়ে অনেক মেয়ের বিয়ে হয়েগিয়েছে অনেক ছেলে কাজে লেগেগিয়েছে তাই হয়ত একটু ছোট ক্লাস-রুমেই চলত।
প্রথম,দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীতে আমার রুল একই ছিল ৪৪, ৪র্থ শ্রেণীতে ৪২, ৫ম শ্রেণীতে ৩৬।
আমাদের সময় স্কলে শিক্ষক ছিলেন ৫ জন,
জ্বনাব মোঃ-রুহুল আমিন স্যার
জ্বনাব মোঃ- ( আমুয়াটা স্যার)
জ্বনাব মোঃ- নাজিম স্যার (দিগরবাড়ি স্যার)
জ্বনাব মোঃ- আহসান উল্লাহ ( আলোকদিয়া স্যার)
জ্বনাব মোঃ- ইসহাক স্যার ( বি এস সি স্যার)
আমাদের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন স্যার বা হেড স্যারকে কখনো রাগ করতে দেখিনি।
নাজিম স্যার বা দিগরবাড়ি স্যারকে সবাই জম-এর মত ভয় পেত এবং মজার-মজার গল্প শুনাতেন আর সবার বিক্লপ নাম দিতেন।
আমুয়াটা স্যার মোড অফ থাকত কিন্তু কোনদিন অন হলে খবর ছিল।
আহসান উল্লাহ আলোকদিয়া স্যার সাধারণত ইসলাম শিক্ষা পড়াতেন, কাউকে শাস্তি দিতে হলে হাতের ৫ আংগুল পিছনে বাকিয়ে হাতের তালুতে প্রহার করতেন।
জ্বনাব মোঃ- ইসহাক স্যার ( বি এস সি স্যার) সাধারণত ইংরেজী এবং গনিত ক্লাস করাতেন এবং তার সময় ছিল স্কুলের স্বর্ণ যুগ শিক্ষা-দিক্ষায়।
স্কুলের চার-পাশ বিভিন্ন ফুল-ফল গাছ দিয়ে ভরা ছিল , স্কুলে ঠিক পছনে ২য় শ্রেণীর পাশেই বড় বাঁশ বাগান ছিল,আমাদের হেড স্যার জ্বনাব রুহুল আমিন স্যার খুব বাগান প্রেমিক মানুষ ছিলেন।
কোন দিন ক্লাসের পড়া না শিখে গেলে স্যার কে বলে সেই ক্লাস টাইমে বাগান পরিষ্কার-পানি দেয়া আমার কাজ ছিল।
স্কুলে বড় জাম গাছটা হতে পরে উওর টাংগাইলের আস্থাবাজন হসপিটাল ময়মনসিংহ সরকারি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে ভর্তি ছিলাম বেশ কিছু দিন, সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় আমার বাবা ৪০-৫০ মণ ধান এবং আমাদের মেশিন বিক্রি করে আমার চিকিৎসা করাতে হয়েছিল যার প্রভাব আমাদের পরিবার পরর্বতি ৮-১০ বছর ছিল!
বিভিন্ন গাছ হতে ফল পেরে বিভিন্ন সময় বিতরন করা হত সবচেয়ে জঘন্য লাগত সব কাঠাল পেরে একসাথে পাকিয়ে কাঠাল ভেংগে কুশ / কাঠালের রুয়া বিতরণ করা,খুব মিস করি অতীতের সেই দিনগুলো ।
Childhood memories are always written in golden letters in every person’s life
সত্যিই অসাধারণ ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো
প্রত্যেকটা মানুষের আবেগ এবং ভালোবাসার জায়গা যা কখনো ভোলা যায় না !